يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُحَرِّمُوْا طَيِّبٰتِ مَآ اَحَلَّ اللّٰهُ لَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوْا ۗاِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ ( المائدة: ٨٧ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
ওহে ঈমানদারগণ! পবিত্র বস্তুরাজি যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম করে নিও না আর সীমালঙ্ঘন করো না, অবশ্যই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসেন না।
English Sahih:
O you who have believed, do not prohibit the good things which Allah has made lawful to you and do not transgress. Indeed, Allah does not like transgressors.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে সব উৎকৃষ্ট বস্তু বৈধ করেছেন, সে সকলকে তোমরা অবৈধ করো না[১] এবং সীমালংঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না।
[১] হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এক ব্যক্তি রসূল (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, 'হে আল্লাহর রসূল! আমি যখনই গোশত ভক্ষণ করি, তখনই আমার মধ্যে কামোত্তেজনা অনুভব করি। তাই নিজের জন্য গোশতকে হারাম করে নিয়েছি।' যার ফলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ তিরমিযী, আলবানী ৩/৪৬) অনুরূপভাবে অবতীর্ণের এই কারণ ব্যতীত বিভিন্ন বর্ণনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কিছু সংখ্যক সাহাবা সংসার ত্যাগ এবং ইবাদতের উদ্দেশ্যে কিছু বৈধ জিনিস হতে (যেমন বিবাহ করা হতে, ঘুমিয়ে রাত্রিযাপন করা হতে, দিনে পানাহার করা হতে) নিজেদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা করেন। যখন নবী করীম (সাঃ) এ ব্যাপারে অবগত হলেন, তখন তাঁদেরকে এ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করলেন। এমন কি উসমান বিন মাযঊন (রাঃ) তিনিও নিজের স্ত্রী থেকে দূরে থাকতেন। অতঃপর তাঁর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকেও তিনি তা করতে নিষেধ করলেন। (হাদীসগ্রন্থসমূহ দ্রষ্টব্য) সুতরাং এই আয়াত ও হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ কর্তৃক হালাল যে কোন বস্তুকে নিজের উপর হারাম করে নেওয়া অথবা তা এমনিই বর্জন করা বৈধ নয়। চাহে তা খাদ্যদ্রব্য হোক অথবা পানীয় দ্রব্য, পোষাক-পরিচ্ছদ হোক অথবা আনন্দদায়ক কোন বস্তু, বৈধ কামনা-বাসনা হোক বা অন্য কিছু।
মাসআলাঃ কোন ব্যক্তি যদি নিজের জন্য কোন হালাল জিনিসকে (কসম ছাড়া) হারাম করে নেয়, তবে তা হারাম বলে গণ্য হবে না; একমাত্র স্ত্রী ব্যতীত। অবশ্য এ ব্যাপারে উলামাদের অভিমত হচ্ছে, তাকে কসমের কাফফারা দিতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, কোন কিছুই লাগবে না। ইমাম শাওকানী বলেন, সহীহ হাদীস দ্বারা এই কথারই প্রমাণ হয় যে, নবী করীম (সাঃ) কোন ব্যক্তিকে এ ধরনের হারাম করাতে কসমের কাফফারা আদায়ের নির্দেশ প্রদান করেননি। ইমাম ইবনে কাসীর বলেন, 'এই আয়াতের পরে আল্লাহ কসমের কাফফারার কথা উল্লেখ করেছেন, যাতে বুঝা যায় যে, কোন হালাল জিনিসকে নিজের উপর হারাম করে নেওয়া কসমেরই অন্তর্ভুক্ত, যা কাফফারা আদায় করার দাবী রাখে।' কিন্তু এই দলীল সহীহ হাদীসের উপস্থিতিতে গ্রহণীয় নয়। সুতরাং সঠিক হল,যা ইমাম শাওকানী বলেছেন। (সউদী আরবের মুফতীগণের মতে কাফফারা দিতে হবে।)