Skip to main content

আল মায়িদাহ শ্লোক ৮৪

وَمَا لَنَا لَا نُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَمَا جَاۤءَنَا مِنَ الْحَقِّۙ وَنَطْمَعُ اَنْ يُّدْخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ الْقَوْمِ الصّٰلِحِيْنَ  ( المائدة: ٨٤ )

And what
وَمَا
এবং কি
for us (that)
لَنَا
হয়েছে আমাদের
not
لَا
(যে) না
we believe
نُؤْمِنُ
ঈমান আনবো আমরা
in Allah
بِٱللَّهِ
উপর আল্লাহর
and what
وَمَا
এবং যা
came (to) us
جَآءَنَا
কাছে এসেছে আমাদের
from
مِنَ
বিষয়ে
the truth?
ٱلْحَقِّ
মহাসত্যের
And we hope
وَنَطْمَعُ
ও প্রত্যাশা করি আমরা
that
أَن
যে
will admit us
يُدْخِلَنَا
অন্তর্ভুক্ত করবেন আমাদের
our Lord
رَبُّنَا
আমাদের রব
with
مَعَ
সাথে
the people"
ٱلْقَوْمِ
সম্প্রদায়ের"
the righteous"
ٱلصَّٰلِحِينَ
সৎকর্মশীল"

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমাদের কী হয়েছে যে, আমরা আল্লাহ্তে এবং যে সত্যবিধান আমাদের নিকট এসেছে তাতে ঈমান আনব না, আর আমরা প্রত্যাশা করি যে, আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করবেন।

English Sahih:

And why should we not believe in Allah and what has come to us of the truth? And we aspire that our Lord will admit us [to Paradise] with the righteous people."

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

আর আমরা যখন প্রত্যাশা করি যে, আল্লাহ আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করবেন, তখন আল্লাহতে ও আমাদের নিকট আগত সত্যে আমাদের বিশ্বাস স্থাপন না করার কি কারণ থাকতে পারে?’ [১]

[১] হাবশা নামক স্থানে, যেখানে মুসলিমগণ মক্কী জীবনে দুইবার হিজরত করেছিলেন, যেখানে আসহামা নাজাশীর শাসন ছিল। এটি খ্রিষ্টান-রাষ্ট্র বলে পরিচিত ছিল। এই আয়াত হাবশায় অবস্থানরত খ্রিষ্টানদের শানেই অবতীর্ণ হয়। যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম (সাঃ) আমর বিন উমায়ইয়াহ যামরী (রাঃ)-কে লিখিত পত্র সহ নাজাশীর নিকট প্রেরণ করেন এবং তিনি পত্র বহন করে নিয়ে গিয়ে নাজাশীকে পাঠ করে শুনান। নাজাশী উক্ত পত্র শোনার পর হাবশায় অবস্থানরত মুহাজিরগণ ও জা'ফর ইবনে আবু তালেব (রাঃ)-কে ডেকে পাঠান। আর সাথে সাথে তাঁর স্বধর্মীয় আলেম, আবেদ ও পন্ডিতগণকেও একত্রিত করেন। অতঃপর জা'ফর (রাঃ)-কে কুরআন পাঠ করার নির্দেশ দেন এবং তিনি সূরা মারয়্যাম পাঠ করেন; যাতে ঈসা (আঃ)-এর অলৌকিক জন্ম-বৃত্তান্ত ও আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল হওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে। তারা সকলেই তেলাওয়াত শুনে বড় প্রভাবিত হন। তাঁদের চক্ষু দিয়ে অশ্রুধারা প্রবাহিত হয় এবং তাঁরা সকলেই ঈমান আনয়ন করেন। আবার কেউ বলেন, নাজাশী তাঁর কিছু সংখ্যক উলামাকে রসূল (সাঃ)-এর নিকট প্রেরণ করেন। যখন রসূল (সাঃ) তাঁদের সামনে কুরআন পাঠ করে শুনান, তখন তাঁদের চক্ষু দিয়ে অনায়াসে অশ্রুধারা প্রবাহিত হয় এবং তাঁরা সকলেই ঈমান আনয়ন করেন। (ফাতহুল ক্বাদীর) কুরআন শুনে যেভাবে তাঁরা প্রভাবিত হয়েছিলেন, উল্লিখিত আয়াতে তার চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে। এই শ্রেণীর খ্রিষ্টানদের ঈমান আনয়নের কথা কুরআনের বেশ কিছু জায়গায় উল্লিখিত রয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন,{وَإِنَّ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَمَن يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْهِمْ خَاشِعِينَ لِلّهِ} অর্থাৎ, নিশ্চয় গ্রন্থধারীদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা আল্লাহতে, তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে আল্লাহর নিকট বিনয়াবনত হয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে---। (সূরা আলে ইমরান ৩;১৯৯) আর হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন নবী করীম (সাঃ) নাজাশী বাদশাহর মৃত্যুর সংবাদ পেলেন, তখন তিনি সাহাবা কেরাম (রাঃ)-কে বললেন, হাবশাতে তোমাদের ভাই নাজাশীর ইন্তেকাল হয়েছে, তাঁর জানাযার নামায আদায় কর। সুতরাং নবী করীম (সাঃ) মুসাল্লায় তাঁর গায়েবী জানাযার নামায আদায় করলেন। (বুখারী, মুসলিম) অন্য এক হাদীসে আহলে কিতাবদের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ)-এর নবুঅতের প্রতি যে ঈমান আনয়ন করবে, তাকে দ্বিগুণ সওয়াবের অধিকারী করা হবে। (বুখারীঃ ইলম অধ্যায় ও নিকাহ অধ্যায়)