يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مَنْ يَّرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِيْنِهٖ فَسَوْفَ يَأْتِى اللّٰهُ بِقَوْمٍ يُّحِبُّهُمْ وَيُحِبُّوْنَهٗٓ ۙاَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ اَعِزَّةٍ عَلَى الْكٰفِرِيْنَۖ يُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَلَا يَخَافُوْنَ لَوْمَةَ لَاۤىِٕمٍ ۗذٰلِكَ فَضْلُ اللّٰهِ يُؤْتِيْهِ مَنْ يَّشَاۤءُۗ وَاللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ ( المائدة: ٥٤ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ তার দ্বীন হতে ফিরে গেলে সত্বর আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায়কে নিয়ে আসবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসেন আর তারাও তাঁকে ভালবাসবে, তারা মু’মিনদের প্রতি কোমল আর কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে, কোন নিন্দুকের নিন্দাকে তারা ভয় করবে না, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ- যাকে ইচ্ছে তিনি দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যের অধিকারী, সর্বজ্ঞ।
English Sahih:
O you who have believed, whoever of you should revert from his religion – Allah will bring forth [in place of them] a people He will love and who will love Him [who are] humble toward the believers, strong against the disbelievers; they strive in the cause of Allah and do not fear the blame of a critic. That is the favor of Allah; He bestows it upon whom He wills. And Allah is all-Encompassing and Knowing.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ ধর্ম হতে ফিরে গেলে[১] আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনয়ন করবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে,[২] তারা হবে বিশ্বাসীদের প্রতি কোমল ও অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দায় ভয় করবে না,[৩] এ আল্লাহর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন। বস্তুতঃ আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।
[১] আল্লাহ তাআলা নিজের ইলম মোতাবেক বলেছেন; যা নবী করীম (সাঃ)-এর মৃত্যুর পরপরই প্রকাশ পেয়েছিল। তা হচ্ছে, ইসলাম-ত্যাগের ফিতনা; আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের নিরলস প্রচেষ্টায় যার সমাপ্তি ঘটেছিল।
[২] ধর্ম-ত্যাগীদের পরিবর্তে আল্লাহ এমন এক কওমকে নির্বাচিত করবেন, যাদের চারটি স্পষ্ট গুণ বর্ণনা করা হয়েছে; (ক) আল্লাহর প্রতি ভালবাসা রাখা ও তাঁর ভালবাসার পাত্রতে পরিণত হওয়া। (খ) ঈমানদারদের প্রতি কোমল ও বিনম্র এবং কাফেরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর হওয়া। (গ) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। এবং (ঘ) আল্লাহর ব্যাপারে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারকে পরোয়া না করা। সাহাবায়ে কেরামগণ (রাঃ) এই সমস্ত গুণের অধিকারী ছিলেন। যার কারণে আল্লাহ তাঁদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে মহা সৌভাগ্যবান বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর দুনিয়াতেই তিনি তাঁদের প্রতি সন্তুষ্টির সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন।
[৩] এটা ঐ ঈমানদারগণের ৪র্থ নম্বর গুণ। অর্থাৎ, মহান আল্লাহর আনুগত্য ও হুকুম পালনের ব্যাপারে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারকে ভয় ও পরোয়া করবে না। এ গুণটিও বড় গুরুত্বপূর্ণ গুণ। সমাজে যখন কোন পাপের প্রচলন ব্যাপক হয়ে যায়, তখন তার বিরুদ্ধে এই গুণ ছাড়া নেকীর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা এবং আল্লাহর বিধানের আনুগত্য করা সম্ভব নয়। সমাজে কত শত এমন মানুষ আছে যাঁরা পাপাচরণ, আল্লাহ-দ্রোহিতা এবং সামাজিক অশ্লীলতা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করে, কিন্তু এই নিন্দুকের নিন্দা ও তিরস্কারের মোকাবেলা করার মত ক্ষমতা তাদের নেই। ফলে পাপের ঐ দলদল হতে বের হতে পারে না এবং হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য করার মত তওফীকও লাভ করে না। এই জন্যেই পরবর্তীতে আল্লাহ বলেছেন, যাদের মধ্যে এই চারটি গুণ বিদ্যমান আছে তাদের উপর আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ।