وَلَوْلَا فَضْلُ اللّٰهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهٗ لَهَمَّتْ طَّاۤىِٕفَةٌ مِّنْهُمْ اَنْ يُّضِلُّوْكَۗ وَمَا يُضِلُّوْنَ اِلَّآ اَنْفُسَهُمْ وَمَا يَضُرُّوْنَكَ مِنْ شَيْءٍ ۗ وَاَنْزَلَ اللّٰهُ عَلَيْكَ الْكِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُۗ وَكَانَ فَضْلُ اللّٰهِ عَلَيْكَ عَظِيْمًا ( النساء: ١١٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যদি তোমার প্রতি আল্লাহর করুণা এবং দয়া না হত, তবে তাদের একদল তো তোমাকে পথভ্রষ্ট করতেই চেয়েছিল; বস্তুতঃ তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করে না আর তারা তোমার কিছুই অনিষ্ট করতে পারবে না, কারণ আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমাত নাযিল করেছেন এবং তুমি যা জানতে না তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং তোমার উপর রয়েছে আল্লাহর অপরিসীম অনুগ্রহ।
English Sahih:
And if it was not for the favor of Allah upon you, [O Muhammad], and His mercy, a group of them would have determined to mislead you. But they do not mislead except themselves, and they will not harm you at all. And Allah has revealed to you the Book and wisdom and has taught you that which you did not know. And ever has the favor of Allah upon you been great.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আর যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকত, তবে তাদের একদল তো তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে চেষ্টাই করেছিল। [১] কিন্তু তারা নিজেদেরকে ছাড়া আর কাউকে পথভ্রষ্ট করতে পারবে না এবং তোমার কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তুমি যা জানতে না, তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। [২] আর তোমার প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
[১] এখানে আল্লাহ তাআলার বিশেষ হিফাযত ও রক্ষণাবেক্ষণের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে, যা তিনি কেবল নবীদের জন্য প্রয়োগ করেছেন। আর এটা ছিল তাঁর নবীদের উপর বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়া স্বরূপ। طَائِفَةٌ (দল) বলতে সেই লোক, যারা বানী উবাইরিকের সমর্থনে রসূল (সাঃ)-এর নিকট তাদের নির্দোষ হওয়ার বার্তা পেশ করছিল। যার ভিত্তিতে আশঙ্কা ছিল যে, নবী করীম (সাঃ) তাকে চুরির অপবাদ থেকে মুক্ত ঘোষণা করবেন, যে প্রকৃতপক্ষে চোর ছিল।
[২] এ হল দ্বিতীয় অনুগ্রহের কথা, যা কিতাব ও হিকমত (সুন্নাহ) অবতীর্ণ করে এবং জরুরী বিষয়ের জ্ঞান দান করে রসূল (সাঃ)-এর প্রতি করা হয়েছিল। যেমন তিনি অন্যত্র বলেছেন, [وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلا الْأِيمَانُ] অর্থাৎ, এভাবে আমি নিজ নির্দেশে তোমার প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) করেছি রূহ। তুমি তো জানতে না গ্রন্থ কি, ঈমান (বিশ্বাস) কি। (শূরাঃ ৫২) [وَمَا كُنْتَ تَرْجُو أَنْ يُلْقَى إِلَيْكَ الْكِتَابُ إِلَّا رَحْمَةً مِنْ رَبِّكَ] "তুমি আশা করতে না যে, তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হবে। এটা কেবল তোমার পালনকর্তার রহমত।" (ক্বাস্বাসঃ ৮৬) এই সমস্ত আয়াত দ্বারা জানা গেল যে, মহান আল্লাহ রসূল (সাঃ)-এর উপর দয়া ও অনুগ্রহ করেছেন এবং তাঁকে কিতাব ও হিকমতও দান করেছেন। এ ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ের জ্ঞান (আল্লাহর পক্ষ হতে) তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, যে ব্যাপারে তিনি অবহিত ছিলেন না। এ থেকেও প্রমাণিত হয় যে, তিনি গায়েব জানতেন না। কেননা, তিনি নিজেই যদি অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাত হতেন, তাহলে অন্য কারো কাছে জ্ঞানার্জন করার প্রয়োজন হত না। যিনি অপরের থেকে জানতে পারেন, অহী অথবা অন্য কোন মাধ্যমে, তিনি অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাতা হতে পারেন না।