۞ وَمَنْ يُّهَاجِرْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ يَجِدْ فِى الْاَرْضِ مُرَاغَمًا كَثِيْرًا وَّسَعَةً ۗوَمَنْ يَّخْرُجْ مِنْۢ بَيْتِهٖ مُهَاجِرًا اِلَى اللّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ ثُمَّ يُدْرِكْهُ الْمَوْتُ فَقَدْ وَقَعَ اَجْرُهٗ عَلَى اللّٰهِ ۗوَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا ࣖ ( النساء: ١٠٠ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে হিজরাত করবে, সে পৃথিবীতে বহু আশ্রয়স্থল এবং প্রাচুর্য প্রাপ্ত হবে; এবং যে ব্যক্তি নিজের গৃহ হতে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে হিজরাত করে বের হয়, অতঃপর মৃত্যু তাকে পেয়ে বসে তার সাওয়াব আল্লাহর জিম্মায় সাব্যস্ত হয়ে গেছে এবং আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
English Sahih:
And whoever emigrates for the cause of Allah will find on the earth many [alternative] locations and abundance. And whoever leaves his home as an emigrant to Allah and His Messenger and then death overtakes him – his reward has already become incumbent upon Allah. And Allah is ever Forgiving and Merciful.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আর যে কেউ আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করবে, সে পৃথিবীতে বহু আশ্রয়স্থল ও প্রাচুর্য লাভ করবে[১] এবং যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগী হয়ে বের হলে অতঃপর (সে অবস্থায়) তার মৃত্যু ঘটলে তার পুরস্কারের ভার আল্লাহর উপর।[২] বস্তুতঃ আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[১] এই আয়াতে হিজরতের প্রতি প্রেরণা এবং মুশরিকদের থেকে পৃথকভাবে বসবাস করার শিক্ষা রয়েছে। مُرَاغَمًا এর অর্থ স্থান, বাসস্থান অথবা আশ্রয়স্থল। আর سَعَةٌ এর অর্থ রুযীর প্রাচুর্য অথবা স্থান ও পৃথিবী ও দেশসমূহের প্রশস্ততা।
[২] এখানে নেক-নিয়ত অনুযায়ী নেকী ও প্রতিদান পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে, যদিও কেউ মৃত্যু হয়ে যাওয়ার কারণে নেক আমলকে পূর্ণ করতে না পারে। যেমন, অতীত উম্মতের মধ্য থেকে এমন এক ব্যক্তির ঘটনা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে ১০০ জন মানুষ খুন করেছিল। অতঃপর তওবা করার জন্য পুণ্যবানদের একটি গ্রামে যাচ্ছিল। পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হয়ে যায়। মহান আল্লাহ পুণ্যবানদের গ্রামকে অন্য গ্রামের তুলনায় নিকটতর করে দিলেন। যার ফলে রহমতের ফিরিশতাগণ তাকে তাঁদের সাথে নিয়ে গেলেন। (বুখারী ৩৪৭০, মুসলিম ২৬৭৭নং) অনুরূপ যে ব্যক্তি হিজরতের নিয়তে ঘর থেকে বের হল, তার যদি পথিমধ্যেই মৃত্যু এসে যায়, সে আল্লাহর পক্ষ হতে হিজরতের সওয়াব অবশ্যই পাবে, যদিও সে হিজরতের কাজ সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়নি। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, ((إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ)) আমলসমূহ নির্ভর করে নিয়তের উপর। ((وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِىءٍمَا نَوَى)) আর মানুষ তা-ই পায়, যার সে নিয়ত করে। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্যই হবে। আর যে দুনিয়া অর্জনের জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত তারই জন্য হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছে।" (বুখারী১, মুসলিম ১৯০৭নং) এটি একটি এমন ব্যাপক বিধান, যা দ্বীনের প্রত্যেক বিষয়কেই শামিল। অর্থাৎ, কাজ করার সময় যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ উদ্দেশ্য হয়, তবে তা গ্রহণীয় হবে, অন্যথা তা প্রত্যাখ্যাত হবে।