اَلَا لِلّٰهِ الدِّيْنُ الْخَالِصُ ۗوَالَّذِيْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٖٓ اَوْلِيَاۤءَۘ مَا نَعْبُدُهُمْ اِلَّا لِيُقَرِّبُوْنَآ اِلَى اللّٰهِ زُلْفٰىۗ اِنَّ اللّٰهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِيْ مَا هُمْ فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ ەۗ اِنَّ اللّٰهَ لَا يَهْدِيْ مَنْ هُوَ كٰذِبٌ كَفَّارٌ ( الزمر: ٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
জেনে রেখ, খালেস দ্বীন কেবল আল্লাহরই জন্য। যারা তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবক বানিয়ে নিয়েছে তারা বলে- আমরা তাদের ‘ইবাদাত একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেবে। (সত্য পথ থেকে সরে গিয়ে মিথ্যে পথ ও মতের জন্ম দিয়ে) তারা যে মতভেদ করছে, আল্লাহ তার চূড়ান্ত ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যেবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সঠিক পথ দেখান না।
English Sahih:
Unquestionably, for Allah is the pure religion. And those who take protectors besides Him [say], "We only worship them that they may bring us nearer to Allah in position." Indeed, Allah will judge between them concerning that over which they differ. Indeed, Allah does not guide he who is a liar and [confirmed] disbeliever.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
জেনে রাখ, খাঁটি আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য।[১] যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, তারা বলে, ‘আমরা এদের পূজা এ জন্যই করি যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্যে এনে দেবে।’[২] ওরা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে, আল্লাহ তার ফায়সালা করে দেবেন।[৩] নিশ্চয় আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না, যে মিথ্যাবাদী অবিশ্বাসী। [৪]
[১] এটা সেই খালেস ইবাদতের তাকীদ যার আদেশ পূর্বের আয়াতে দেওয়া হয়েছে, আর তা হল ইবাদত ও আনুগত্য একমাত্র এক আল্লাহর জন্যই শোভনীয়, তাঁর ইবাদতে কাউকে অংশীদার করা যাবে না এবং তিনি ব্যতীত অন্য কেউ এর যোগ্যও নয়। তবে রসূল (সাঃ)-এরও আনুগত্য করতে হবে, কারণ রাসূলের আনুগত্য প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই আনুগত্য; অন্য কারোর নয়। এ কথা আল্লাহ নিজেই ঘোষণা করেছেন। এর পরেও ইবাদতের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়। কারণ ইবাদত আল্লাহ ছাড়া কোন বড় থেকে বড় রসূলেরও করা বৈধ নয়; সাধারণ মানুষের, যাদেরকে মানুষ নিজের ইচ্ছামত আল্লাহর আসনে বসিয়ে রেখেছে, তারা তো দূরের কথা। (مَا أَنْزَلَ اللهُ بِهَا مِنْ سُلْطَان) 'আল্লাহর পক্ষ থেকে এর কোন প্রমাণ নেই।'
[২] এখান হতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ তাআলাকেই স্রষ্টা, রুযীদাতা এবং বিশ্বজাহানের নিয়ন্ত্রণকারী বলে বিশ্বাস করত। অথচ তারা অন্যের ইবাদত কেন করত? এর উত্তর তারা এই বলে দিত, যা কুরআন পাক এখানে বর্ণনা করেছে। তা হল 'সম্ভবতঃ এদের দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারব অথবা এরা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করবে।' যেমন অন্য জায়গায় বলেছেন, (هَؤُلآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنْدَ اللهِ) "এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী হবে।"
(সূরা ইউনুস ১০;১৮ আয়াত)
[৩] কারণ, পৃথিবীতে কেউ এটা স্বীকার করতে প্রস্তুত নয় যে, সে শিরক করছে বা সে ভুল পথে আছে। ফলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলাই ফায়সালা করবেন এবং ফায়সালা অনুযায়ী প্রতিদান ও শাস্তি দেবেন।
[৪] সেই মিথ্যা উপাস্য দ্বারা তারা আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে বা ওরা তাদের জন্য সুপারিশ করবে --এ কথা একেবারে মিথ্যা এবং আল্লাহ ব্যতীত ক্ষমতাহীন ব্যক্তিদেরকে উপাস্য মনে করাও বড় অকৃতজ্ঞতা। এমন মিথ্যুক ও অকৃতজ্ঞরা কিভাবে হিদায়াত পাবে?