۞ اِنَّ اللّٰهَ اصْطَفٰىٓ اٰدَمَ وَنُوْحًا وَّاٰلَ اِبْرٰهِيْمَ وَاٰلَ عِمْرَانَ عَلَى الْعٰلَمِيْنَۙ ( آل عمران: ٣٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
নিশ্চয়ই আল্লাহ আদাম ও নূহকে এবং ইবরাহীমের ও ‘ইমরানের গোত্রকে বিশ্বজগতের উপর মনোনীত করেছেন।
English Sahih:
Indeed, Allah chose Adam and Noah and the family of Abraham and the family of Imran over the worlds –
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
নিশ্চয় আল্লাহ আদম, নূহ, ইব্রাহীমের বংশধর এবং ইমরানের বংশধরকে বিশ্বজগতে মনোনীত করেছেন। [১]
[১] নবীদের বংশে ইমরান নামে দু'জনের আবির্ভাব ঘটেছিল। একজন হলেন মূসা এবং হারুন (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর পিতা এবং দ্বিতীয়জন হলেন, মারয়্যাম (আলাইহাস্ সালাম)-এর পিতা। অধিকাংশ মুফাসসিরগণের নিকট এই আয়াতে দ্বিতীয় ইমরানকে বুঝানো হয়েছে। এই বংশ মারয়্যাম (আলাইহাস্ সালাম) ও তাঁর পুত্র ঈসা (আঃ)-এর কারণে সুউচ্চ মর্যাদা লাভ করেছে। মারয়্যামের মায়ের নাম মুফাসসিরগণ হান্নাহ বিনতে ফাক্বূয লিখেছেন। (তাফসীরে ক্বুরত্ববী ও ইবনে কাসীর) এই আয়াতে মহান আল্লাহ ইমরানের বংশ ছাড়াও আরো তিনটি এমন বংশের কথা উল্লেখ করেছেন, যাদেরকে তিনি তাদের যুগে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলেন। এদের মধ্যে প্রথম হলেন আদম (আঃ)। তাঁকে তিনি নিজ হাত দ্বারা সৃষ্টি করে তাঁর মধ্যে স্বীয় রূহ সঞ্চার করেন। ফিরিশতামন্ডলী দ্বারা তাঁকে সিজদা করান। সকল জিনিসের নাম তাঁকে শিখিয়ে দেন এবং তাঁকে জান্নাতে বাসস্থান দান করেন। অতঃপর তাঁকে সেখান থেকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়। এতেও ছিল তাঁর বহু হিকমত। দ্বিতীয় হলেন, নূহ (আঃ)। তাঁকে এমন সময় নবী করে প্রেরণ করেন, যখন মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তিসমূহকে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছিল। তাঁকে তিনি সুদীর্ঘ আয়ু দান করেছিলেন। তিনি তাঁর জাতির মাঝে সাড়ে ন'শ' বছর পর্যন্ত দ্বীনের তবলীগ করেছিলেন। কিন্তু অল্প কিছু লোক ছাড়া কেউ তাঁর প্রতি ঈমান আনেনি। শেষে তাঁর বদ্দুআয় ঈমানদার লোকগুলো ব্যতীত সমস্ত লোককে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশ যে বৈশিষ্ট্য লাভে ধন্য হয়েছিল তা হল, মহান আল্লাহ পর্যায়ক্রমে তাঁর বংশ থেকে নবী ও বাদশাহ প্রেরণ করেন। বলা বাহুল্য, অধিকাংশ নবী তাঁরই বংশ থেকে প্রেরিত হয়েছিলেন। এমন কি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)ও ছিলেন তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এরই বংশধর।