يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَأْكُلُوا الرِّبٰوٓا اَضْعَافًا مُّضٰعَفَةً ۖوَّاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَۚ ( آل عمران: ١٣٠ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
হে মু’মিনগণ! তোমরা সুদ খেও না ক্রমবর্ধিতভাবে, আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
English Sahih:
O you who have believed, do not consume usury, doubled and multiplied, but fear Allah that you may be successful.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ক্রমবর্ধমান হারে (দ্বিগুণ-চতুর্গুণ বা চক্রবৃদ্ধি হারে) সূদ খেয়ো না,[১] এবং আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে।
[১] যেহেতু উহুদ যুদ্ধে পরাজয় রসূল (সাঃ)-এর অবাধ্যতা এবং পার্থিব সম্পদের প্রতি লোভের কারণে হয়েছিল, তাই দুনিয়ার লোভনীয় জিনিসের মধ্যে সর্বাধিক মারাত্মক সূদ থেকে নিষেধ এবং আল্লাহর আনুগত্য করার তাকীদ করা হচ্ছে। আর 'চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ' খেতে নিষেধ করার অর্থ এই নয় যে, যদি চক্রবৃদ্ধি হারে না হয়, তাহলে তা খাওয়া জায়েয। বরং সূদ কম হোক বা বেশী, ব্যক্তিবিশেষের নিকট থেকে হোক অথবা কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে, তা সর্বাবস্থায় হারামই। যেমন পূর্বেও আলোচিত হয়েছে। সূদ হারাম হওয়ার জন্য এটা (চক্রবৃদ্ধি হারে খাওয়া) শর্ত নয়। বরং বাস্তব পরিবেশের দিকে লক্ষ্য করে এইভাবে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, সেই সময় সূদ খাওয়ার যে পরিবেশ ও ধরন ছিল, তাই প্রকাশ ও বর্ণনা করা হয়েছে। জাহেলিয়াতে সূদের সাধারণ প্রচলন এই ছিল যে, ঋণ পরিশোধ করার সময় এসে যাওয়ার পর তা পরিশোধ করা সম্ভব না হলে, তার (পরিশোধের) সময় বৃদ্ধি করার সাথে সাথে সূদও বর্ধিত হতে থাকত; ফলে সামান্য অর্থও বাড়তে বাড়তে বহুগুণ হয়ে যেত এবং সাধারণ একজন মানুষের পক্ষে তা আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়ত। মহান আল্লাহ বললেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সেই আগুনকে ভয় কর যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। এ থেকে সতর্ক করাও উদ্দেশ্য। অর্থাৎ, সূদ খাওয়া থেকে বিরত না হলে, এই হারাম কাজ তোমাদেরকে কুফরী পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। কারণ, সূদ খাওয়া মানে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা।