اَلزَّانِيْ لَا يَنْكِحُ اِلَّا زَانِيَةً اَوْ مُشْرِكَةً ۖوَّالزَّانِيَةُ لَا يَنْكِحُهَآ اِلَّا زَانٍ اَوْ مُشْرِكٌۚ وَحُرِّمَ ذٰلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ ( النور: ٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
ব্যভিচারী বিয়ে করে না ব্যভিচারিণী বা মুশরিকা নারী ছাড়া। আর ব্যভিচারিণী- তাকে বিয়ে করে না ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষ ছাড়া, মু’মিনদের জন্য এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
English Sahih:
The fornicator does not marry except a [female] fornicator or polytheist, and none marries her except a fornicator or a polytheist, and that [i.e., marriage to such persons] has been made unlawful to the believers.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা অংশীবাদিনীকেই বিবাহ করবে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা অংশীবাদীই বিবাহ করবে। বিশ্বাসীদের জন্য এ বিবাহ অবৈধ। [১]
[১] এ ব্যাপারে ব্যাখ্যাকারিগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, অধিক সময় এ রকমই ঘটে থাকে বলে এ রকম বলা হয়েছে। আয়াতের অর্থ হল, সাধারণতঃ ব্যভিচারী ব্যক্তি বিবাহের জন্য নিজের মত ব্যভিচারিণীর দিকেই রুজু করে থাকে। সেই জন্য দেখা যায় অধিকাংশ ব্যভিচারী নারী-পুরুষ তাদেরই অনুরূপ ব্যভিচারী নারী-পুরুষের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করতে পছন্দ করে। আর এ কথা বলার আসল লক্ষ্য হল, মু'মিনদেরকে সতর্ক করা যে, যেমন ব্যভিচার একটি জঘন্যতম কর্ম ও মহাপাপ, তেমনি ব্যভিচারী ব্যক্তির সাথে বিবাহ ও দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক গড়াও অবৈধ। ইমাম শাওকানী (রঃ) এই মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এবং হাদীসসমূহে এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার যে কারণ বলা হয়েছে, তাতেও উক্ত মতের সমর্থন হয়। যে কোন এক সাহাবী নবী (সাঃ)-এর কাছে (আনাক বা উম্মে মাহযূল নামক) ব্যভিচারিণীকে বিবাহ করার অনুমতি চাইলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। অর্থাৎ, তাঁদেরকে এ রকম করতে নিষেধ করা হল। এখান হতে দলীল গ্রহণ করে উলামাগণ বলেছেন যে, কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে বা কোন মহিলা কোন পুরুষের সাথে ব্যভিচার করে বসলে তাদের আপোসে বিবাহ হারাম। তবে তারা যদি বিশুদ্ধভাবে তওবা করে নেয়, তাহলে বিবাহ বৈধ। (তাফসীর ইবনে কাসীর)
আবার কেউ কেউ বলেন, এখানে نِكاح বলতে বিবাহ উদ্দেশ্য নয়। বরং তা মিলন বা সঙ্গম (মূল) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। উদ্দেশ্য হল, ব্যভিচার ও যিনার নিকৃষ্টতা ও জঘন্যতা বর্ণনা করা। আর আয়াতের অর্থ এই যে, ব্যভিচারী ব্যক্তি নিজ যৌনকামনা চরিতার্থ করার জন্য অবৈধ রাস্তা অবলম্বন করে ব্যভিচারিণী মহিলার প্রতি রুজু করে থাকে, অনুরূপ ব্যভিচারিণী মহিলাও ব্যভিচারী পুরুষের প্রতি রুজু করে। কিন্তু মু'মিনদের জন্য এ রকম করা হারাম। অর্থাৎ, ব্যভিচার হারাম। এখানে ব্যভিচারীর সাথে মুশরিক নারী-পুরুষের আলোচনা এই জন্য করা হয়েছে যে, শিরকের সাথে ব্যভিচারের বেশ সামঞ্জস্য আছে। একজন মুশরিক যেরূপ আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে অন্যের নিকট মাথা নত করে, অনুরূপ একজন ব্যভিচারী পুরুষ নিজের স্ত্রীকে বাদ দিয়ে বা একজন ব্যভিচারিণী নিজের স্বামীকে ছেড়ে অন্যের সাথে যৌনমিলন করে নিজের মুখে কালিমা লেপন করে। এইভাবে মুশরিক ও ব্যভিচারীর মাঝে এক ধরনের নৈতিক সামঞ্জস্য পাওয়া যায়।