سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ ۗقُلْ فَاَنّٰى تُسْحَرُوْنَ ( المؤمنون: ٨٩ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তারা বলবে (সকল কিছুর কর্তৃত্ব) আল্লাহর। তাহলে কেমন করে তোমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে পড়ছ?
English Sahih:
They will say, "[All belongs] to Allah." Say, "Then how are you deluded?"
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
তারা বলবে, ‘আল্লাহর।’ বল, ‘তবুও তোমরা কেমন করে বিভ্রান্ত হচ্ছ?’ [১]
[১] অর্থাৎ, তাহলে তোমাদের জ্ঞানের কি হয়েছে যে, এই স্বীকারোক্তি ও অবগতির পরও অন্যকে আল্লাহর উপাসনায় অংশীদার করছ? কুরআনের এই স্পষ্ট উক্তি হতে পরিষ্কার জানা যায় যে, মক্কার মুশরিকরা মহান আল্লাহ প্রতিপালক, স্রষ্টা, মালিক ও রুযীদাতা হওয়ার কথা (অর্থাৎ তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহর কথা) অস্বীকার করত না; বরং এ সব কথাই তারা বিশ্বাস করত। তারা শুধু 'তাওহীদুল উলূহিয়্যায়' (আল্লাহর একত্ববাদ)-কে অস্বীকার করত। অর্থাৎ, ইবাদত ও উপাসনা কেবলমাত্র এক আল্লাহর করত না; বরং তাঁর সঙ্গে অন্যকেও অংশীদার বানাত। এই জন্য নয় যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে বা তাঁর পরিচালনায় অন্য কেউ অংশীদার আছে; বরং কেবলমাত্র এই বিভ্রান্তির শিকার হয়ে যে, এঁরাও আল্লাহর নেক বান্দা ছিলেন। তাঁদেরকেও আল্লাহ কিছু এখতিয়ার দিয়ে রেখেছেন। তাই তাঁদের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চাই। বর্তমান যুগের কবরপূজারী বিদআতীরাও ঠিক এই বিভ্রান্তির শিকার। যার কারণে সমাধিস্থ মৃত ব্যক্তিদেরকে সাহায্য, সমৃদ্ধি ও সন্তান লাভের আশায় আহবান করে, তাদের নামে নযর মানে, নিয়ায পেশ করে এবং তাদেরকে আল্লাহর (উক্ত) ইবাদতসমূহে শরীক করে নেয়! অথচ মহান আল্লাহ এ কথা কোথাও বলেননি যে, আমি কোন পরলোকগত বুযুর্গ, অলী বা নবীকে কোন এখতিয়ার বা শক্তি দিয়ে রেখেছি। অতএব তোমরা তাদের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ কর। অথবা তাদেরকে সাহায্যের জন্য আহবান জানাও। অথবা তাদের নামে নযর-নিয়ায, মানত কর। এই কারণেই আল্লাহ পরবর্তীতে বলেছেন, আমি তাদের নিকট সত্য পৌঁছিয়ে দিয়েছি। অর্থাৎ তিনি এ কথা সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আর এরা যদি আল্লাহর ইবাদতে অন্যকে শরীক করছে, তাহলে এই জন্য নয় যে, তাদের নিকট এ ব্যাপারে কোন দলীল আছে। কক্ষনো না; বরং এ কাজ তারা কেবল একে অন্যের দেখাদেখি এবং পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুকরণ করে তাদেরকে তাঁর সঙ্গে শরীক করছে। বরং বাস্তবে এরা সম্পূর্ণ মিথ্যুক। যেহেতু না তাঁর কোন সন্তান আছে, আর না কোন শরীক। যদি তা হতো, তাহলে প্রত্যেক শরীক নিজের ভাগের সৃষ্টির সুব্যবস্থা নিজের ইচ্ছামত করে নিত এবং প্রত্যেক শরীক অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চেষ্টা করত। আর যখন এরূপ কোন কিছু নয় ও পৃথিবীর ব্যবস্থাপনায় কোন প্রকারের টানাপড়েন নেই, তাহলে এ কথা ধ্রুব সত্য যে, আল্লাহ তাআলা ঐ সমস্ত কথা হতে পাক-পবিত্র এবং বহু ঊর্ধ্বে, যা মুশরিকরা তাঁর সম্পর্কে বলে থাকে।