قُلْنَا لَا تَخَفْ اِنَّكَ اَنْتَ الْاَعْلٰى ( طه: ٦٨ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আমি বললাম, ‘ভয় করো না, তুমিই বিজয়ী হবে।’
English Sahih:
We [i.e., Allah] said, "Fear not. Indeed, it is you who are superior.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আমি বললাম, ‘ভয় করো না; নিশ্চয় তুমিই প্রবল।[১]
[১] এই বিস্ময়কর দৃশ্য দেখে মূসা (আঃ)-এর মনে ভয়ের সঞ্চার হল। আর তা ছিল প্রকৃতিগত স্বাভাবিক ব্যাপার; যা নবুঅত ও ত্রুটিহীনতার পরিপন্থী নয়। কারণ, নবী একজন মানুষই হয়ে থাকেন; যিনি মানবীয় স্বাভাবিক আচরণের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন না। এখান হতে এ কথা বুঝা যায় যে, যেমন নবীগণ অন্যান্য মানুষের মত বিপদগ্রস্ত হন, তেমনি তাঁরা জাদুর প্রভাবে প্রভাবিতও হতে পারেন। যেমন নবী (সাঃ)-এর উপর ইয়াহুদীরা জাদু করেছিল এবং তার প্রভাব তিনিও অনুভব করেছিলেন। এতে নবুঅতের কাজ প্রভাবিত হয় না। আল্লাহ তাআলা নবীকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দিয়ে থাকেন এবং জাদুর ফলে অহী ও রিসালতের কর্তব্য আদায়ে প্রভাব পড়তে দেন না। তাছাড়া এটাও হতে পারে যে, মূসা (আঃ)-এর এই ভয় হল যে, আমার লাঠি ফেলার আগে আগেই জনগণ যেন জাদু ও ভেল্কিবাজি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে যায়। কিন্তু অধিকতর সম্ভাবনায় তাঁর ভয় এই কারণে হয়েছিল যে, জাদুকররা যে ভেল্কি দেখাল তা লাঠির দ্বারা। আর তাঁর হাতেও ছিল লাঠি, যা মাটিতে ফেলার অপেক্ষায় ছিলেন। মূসা (আঃ)-এর মনে হল যে, দর্শকরা যেন সন্দেহ ও সংশয়ে না পড়ে যায় এবং তারা যেন এটা ভেবে না নেয় যে, দু'দলই একই ধরনের জাদু প্রদর্শন করল। এই জন্য এ ফায়সালা ও নির্ণয় কিভাবে সম্ভব যে, কোনটা জাদু এবং কোনটা মু'জিযা? কে বিজয়ী এবং কে পরাজিত? অর্থাৎ, জাদুও মু'জিযার মধ্যে পার্থক্য সাধনের যে উদ্দেশ্য, সেটা বোধ হয় উপর্যুক্ত কারণে সম্ভব হবে না। এখান হতে বুঝা গেল যে, নবীর নিজ হতে মু'জিযা দেখানো তো অনেক দূরের কথা, অধিকাংশ সময়ে তাঁর এটাও জানা থাকে না যে, তাঁর হাত দ্বারা কোন্ শ্রেণীর মু'জিযা প্রকাশ পাবে। নবীদের হাতে মু'জিযা প্রকাশ করার কাজ একমাত্র আল্লাহর। যাই হোক, মূসা (আঃ)-এর এই সন্দেহ ও সংশয় দূর করে মহান আল্লাহ বললেন, 'হে মূসা! কোন প্রকার ভয় ও ভীতির কারণ নেই, তুমিই বিজয়ী হবে।' এই বাক্য দ্বারা প্রকৃতিগত ভয় এবং অন্যান্য আশংকা সবই দূর করে দিলেন। সুতরাং শেষ পর্যন্ত তাই হল, যা পরবর্তী আয়াতসমূহে বলা হয়েছে।