اَلْحَجُّ اَشْهُرٌ مَّعْلُوْمٰتٌ ۚ فَمَنْ فَرَضَ فِيْهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوْقَ وَلَا جِدَالَ فِى الْحَجِّ ۗ وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَّعْلَمْهُ اللّٰهُ ۗ وَتَزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوٰىۖ وَاتَّقُوْنِ يٰٓاُولِى الْاَلْبَابِ ( البقرة: ١٩٧ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
হাজ্জ হয় কয়েকটি নির্দিষ্ট মাসে, অতঃপর এ মাসগুলোতে যে কেউ হাজ্জ করার মনস্থ করবে, তার জন্য হাজ্জের মধ্যে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয় এবং তোমরা যে কোন সৎ কাজই কর, আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা করবে আর তাক্বওয়াই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে জ্ঞানী সমাজ! আমাকেই ভয় করতে থাক।
English Sahih:
Hajj is [during] well-known months, so whoever has made Hajj obligatory upon himself therein [by entering the state of ihram], there is [to be for him] no sexual relations and no disobedience and no disputing during Hajj. And whatever good you do – Allah knows it. And take provisions, but indeed, the best provision is fear of Allah. And fear Me, O you of understanding.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
সুবিদিত মাসে (যথাঃ শওয়াল, যিলকদ ও যিলহজ্জে) হজ্জ্ব হয়।[১] সুতরাং যে কেউ এই মাসগুলিতে হজ্জ করার সংকল্প করে, সে যেন হজ্জের সময় স্ত্রী-সহবাস (কোন প্রকার যৌনাচার), পাপ কাজ এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে।[২] তোমরা যে সৎকাজ কর, আল্লাহ তা জানেন। আর তোমরা (পরকালের) পাথেয় সংগ্রহ কর এবং আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়।[৩] হে জ্ঞানিগণ! তোমরা আমাকেই ভয় কর।
[১] আর তা হল, শাওয়াল, যুল-ক্বা'দাহ এবং যুল-হাজ্জাহ মাসের প্রথম তেরো দিন। অর্থাৎ, উমরাহ তো বছরে সব সময় জায়েয, কিন্তু হজ্জ কেবল নির্দিষ্ট দিনে হয়, তাই হজ্জের ইহরাম হজ্জের মাস ছাড়া অন্য মাসে বাঁধা বৈধ নয়। (ইবনে কাসীর)
মাসআলাঃ হজ্জে ক্বিরান অথবা ইফরাদের ইহরাম মক্কাবাসীরা মক্কার ভিতর থেকেই বাঁধবে। তবে হজ্জে তামাত্তু'র উদ্দেশ্যে উমরার ইহরাম বাঁধার জন্য হারাম সীমানার বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক। (ফাতহুল বারী, হজ্জ অধ্যায়ঃ উমরাহ পরিচ্ছেদ, মুঅত্তা ইমাম মালিক) অনুরূপ দুনিয়ার অন্যান্য স্থান থেকে আগত লোকেরা ৮ই যুলহজ্জ হজ্জে তামাত্তু'র জন্য মক্কা (নিজের বাসা) থেকেই ইহরাম বাঁধবে। আবার কোন কোন আলেমের নিকট মক্কাবাসীদেরকে উমরার ইহরাম বাঁধার জন্য হারাম সীমানার বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সুতরাং তারা সর্বপ্রকারের হজ্জ এবং উমরার জন্য নিজ নিজ স্থান থেকেই ইহরাম বাঁধতে পারে।
সতর্কতাঃ হাফেয ইবনুল ক্বাইয়্যেম লিখেছেন যে, রসূল (সাঃ)-এর কথা ও কাজ দ্বারা কেবল দু'প্রকারের উমরাহ প্রমাণিত, এক যা হজ্জে তামাত্তু'র সাথে করা যেতে পারে। আর দ্বিতীয় হল, এমন উমরাহ যা হজ্জের মাস ব্যতীত অন্য দিনে কেবল উমরাহ করার নিয়তে সফর করে করা হয়। এ ছাড়া হারাম সীমানার বাইরে গিয়ে (হারামের নিকটস্থ কোন স্থান থেকে) ইহরাম বেঁধে এসে (একই সফরে একাধিক) উমরা করা বিধেয় নয়। (অবশ্য তার ব্যাপার ভিন্ন, যে আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহার মত সমস্যায় পড়ে আগে উমরাহ না করতে পারবে।) (যাদুল মাআ'দ ২খন্ড নতুন ছাপা)
[২] সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, "যে ব্যক্তি এই ঘরের হজ্জ করে এবং অশ্লীল ও শরীয়ত বিরোধী কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে, সে ব্যক্তি পাপ থেকে এমন পবিত্র হয়ে বেড়িয়ে আসে, যেন সেই দিনই তার মা তাকে নবজাত শিশুরূপে প্রসব করছে।" (বুখারী ১৮১৯-মুসলিম ১৩৫০)
[৩] এখানে 'তাকওয়া' বা আত্মসংযমের অর্থঃ চাওয়া থেকে বেঁচে থাকা। অনেক মানুষ হজ্জের পাথেয় না নিয়েই বাড়ী থেকে বের হত এবং বলত যে, আমাদের আল্লাহর উপর ভরসা আছে। (অতঃপর তারা লোকের কাছে ভিক্ষা করত।) মহান আল্লাহ 'তাওয়াক্কুল' বা ভরসার ঐ অর্থকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে পাথেয় নেওয়ার উপর তাকীদ করলেন।