اِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ الَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِيْ تَجْرِيْ فِى الْبَحْرِ بِمَا يَنْفَعُ النَّاسَ وَمَآ اَنْزَلَ اللّٰهُ مِنَ السَّمَاۤءِ مِنْ مَّاۤءٍ فَاَحْيَا بِهِ الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيْهَا مِنْ كُلِّ دَاۤبَّةٍ ۖ وَّتَصْرِيْفِ الرِّيٰحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاۤءِ وَالْاَرْضِ لَاٰيٰتٍ لِّقَوْمٍ يَّعْقِلُوْنَ ( البقرة: ١٦٤ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
নিশ্চয়ই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে, রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে, লোকের উপকারী দ্রব্যাদিসহ সমুদ্রে চলাচলকারী জলযানের মধ্যে এবং আকাশ হতে আল্লাহর বর্ষিত সেই পানির মধ্যে যদ্বারা তিনি পৃথিবীকে- মরে যাওয়ার পর আবার জীবিত করেন এবং তাতে সকল প্রকার জীব-জন্তুর বিস্তারণে এবং বাতাসের গতি পরিবর্তনের মধ্যে এবং আকাশ ও ভূমন্ডলের মধ্যস্থলে নিয়ন্ত্রিত মেঘপুঞ্জের মধ্যে বিবেকসম্পন্ন লোকেদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।
English Sahih:
Indeed, in the creation of the heavens and the earth, and the alternation of the night and the day, and the [great] ships which sail through the sea with that which benefits people, and what Allah has sent down from the heavens of rain, giving life thereby to the earth after its lifelessness and dispersing therein every [kind of] moving creature, and [His] directing of the winds and the clouds controlled between the heaven and earth are signs for a people who use reason.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
নিশ্চয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে, রাত ও দিনের পরিবর্তনের মধ্যে, যে সব জাহাজ মানুষের লাভের জন্য সাগরে চলাচল করে তাদের মধ্যে, আল্লাহ আকাশ থেকে যে পানি বর্ষণ করে মৃত ভূমিকে জীবিত করেন[১] এবং সকল প্রকার প্রাণী তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন, আর বায়ুরাশির প্রবাহের মধ্যে (গতি পরিবর্তনে) এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী (আল্লাহর আজ্ঞাধীন ভাসমান) মেঘের মধ্যে জ্ঞানী লোকের জন্য অবশ্যই (আল্লাহর মহিমার) বহু নিদর্শন রয়েছে।
[১] এই আয়াতটি বহুল অর্থবিশিষ্ট। কারণ, বিশ্বজাহানের সৃষ্টি এবং তার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কীয় সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে একত্রে উল্লিখিত হয়েছে, যা অন্য কোন আয়াতে নেই। (ক) আসমান ও যমীনের সৃষ্টিঃ যার ব্যাপকতা ও বিশালতা বর্ণনার মুখাপেক্ষী নয়। (খ) রাত ও দিনের একের পর এক আসা। দিনকে উজ্জ্বল এবং রাতকে অন্ধকার করাঃ যাতে জীবিকার জন্য কাজকর্মও যেন হয় এবং আরামও যেন করা যেতে পারে। আবার রাত বড় ও দিন ছোট হওয়া। অনুরূপ এর বিপরীত দিন বড় ও রাত ছোট হওয়া। (গ) সমুদ্রে নৌকা ও পানিজাহাজের চলাচলঃ যার সাহায্যে ব্যবসার সফরও হয় এবং জীবিকা নির্বাহের টন টন পণ্যসামগ্রী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছানো হয়। (ঘ) বৃষ্টিঃ যা যমীনের উর্বরতা ও শ্যামলতার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। (ঙ) বিভিন্ন প্রকারের পশু-সৃষ্টিঃ যা বহন, চাষাবাদ এবং যুদ্ধেও কাজে আসে। এমন কি মানুষের খাদ্যের একটা বড় পরিমাণ প্রয়োজন এদের দিয়ে পূরণ হয়। (চ) সব রকমের হাওয়া প্রবাহিতকরণঃ ঠান্ডা ও গরম, উপকারী ও অপকারী। পূর্ব ও পশ্চিমমুখী, আবার উত্তর ও দক্ষিণমুখী; মানুষের জীবন এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী। (ছ) মেঘের সৃষ্টিঃ যার দ্বারা মহান আল্লাহ যেখানে চান, সেখানেই বৃষ্টি বর্ষণ করেন। এই যাবতীয় বিষয়াদি কি মহান আল্লাহর মহাশক্তি ও তাঁর একত্বকে প্রমাণ করে না? অবশ্যই করে। এই সৃষ্টিসমূহ এবং তার নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় তাঁর কি কোন শরীক আছে? না, অবশ্যই না। তাহলে তাঁকে ছেড়ে অন্যকে উপাস্য এবং প্রয়োজন পূরণকারী মনে করা কি বুদ্ধিমানের কাজ?