অতঃপর আমি তাদেরকে গুহায় ঘুমন্ত অবস্থায় কয়েক বছর রেখে দিলাম।
পরে তাদেরকে জাগ্রত করলাম এটা জানার জন্য যে, (গুহাবাসীরা আর যাদের যুগে তারা জাগ্রত হয়েছিল সে যুগের লোকেরা এ) দু’টি দলের মধ্যে কোনটি তাদের অবস্থানকালের সঠিক হিসাব করতে পারে।
আমি তাদের সঠিক বৃত্তান্ত তোমার কাছে বর্ণনা করছি। তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছিল আর আমি তাদের হিদায়াত (ঈমানী চেতনাকে) বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম।
আর তাদের দিল মযবুত করে দিয়েছিলাম যখন তারা (মুশরিক রাজা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে) দাঁড়িয়ে গেল তখন বলল, ‘আমাদের প্রতিপালক তো তিনিই যিনি আসমানসমূহ যমীনের প্রতিপালক। আমরা কক্ষনো তাঁকে ত্যাগ করে অন্য কোন ইলাহকে ডাকব না। যদি আমরা ডাকি তাহলে মহা অপরাধের কথাই বলা হবে।
আমাদের জাতির এই লোকেরা তাঁর পরিবর্তে বহু ইলাহ গ্রহণ করেছে, তারা তাদের ইলাহদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ পেশ করে না কেন? তার থেকে বড় যালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে?
এখন যেহেতু তোমরা তাদের থেকে আর তারা আল্লাহ ছাড়া যেগুলোর ‘ইবাদাত করে তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়েছ, তখন চল, গুহায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ কর। তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালক তাঁর কল্যাণ বিস্তার করবেন আর তোমাদের কাজ-কর্মকে ফলদায়ক করে দেবেন।’
তুমি দেখতে পেতে সূর্য উদয়ের সময় তাদের গুহা হতে ডান দিকে হেলে যেত, আর যখন তা অস্তমিত হত তখন তা তাদের থেকে বাম দিকে নেমে যেত, আর তারা ছিল গুহার অভ্যন্তরে বিশাল চত্বরে। এ হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথ দেখান সে সঠিকপথপ্রাপ্ত আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তার জন্য তুমি কক্ষনো সৎপথের দিশা দানকারী অভিভাবক পাবে না।
তুমি মনে করবে যে তারা সজাগ, অথচ তারা ছিল ঘুমন্ত, আমি তাদের ডানে বামে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম। আর তাদের কুকুরটি ছিল গুহাদ্বারের সম্মুখে তার সামনের পা দু’টি প্রসারিত করে। তুমি যদি তাদেরকে তাকিয়ে দেখতে তাহলে অবশ্যই পেছন ফিরে পালিয়ে যেতে, আর অবশ্যই তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়তে।
আর তাদের এই অবস্থায় আমি তাদেরকে জাগ্রত করলাম যাতে তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের একজন বলল, ‘তোমরা ক’দ্দিন থাকলে?’ তারা বলল, ‘আমরা একদিন কিংবা একদিনের কিছু অংশ হয়তো রয়েছি।’ (শেষে) তারা (সবাই) বলল, ‘তোমাদের প্রতিপালকই ভাল জানেন তোমরা কতকাল রয়েছ। এখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রা নিয়ে শহরে পাঠিয়ে দাও। সে যেন দেখে উত্তম খাবার কোনটি আর তাথেকে তোমাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসে। সে যেন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করে, আর তোমাদের ব্যাপারে কেউ যেন কোনক্রমেই টের না পায়।
যদি তারা তোমাদের কথা জেনে ফেলে তাহলে তারা তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করবে কিংবা তোমাদেরকে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিবে, সে অবস্থায় তোমরা কক্ষনো কল্যাণ লাভ করতে পারবে না।’