স্মরণ কর, যখন আমি ফেরেশতাগণকে বলেছিলাম, ‘আদামকে সাজদাহ কর তখন ইবলিশ ছাড়া সবাই তাকে সাজদাহ করল। সে বলেছিল, ‘আমি কি তাকে সাজদাহ করব যাকে তুমি মাটি থেকে পয়দা করেছ?’
সে বলল, ‘আপনি কি ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন যে, আপনি এ ব্যক্তিকে আমার উপর সম্মান দিচ্ছেন! আপনি যদি আমাকে ক্বিয়ামাতের দিন পর্যন্ত সময় দেন, তাহলে আমি অল্প কিছু বাদে তার বংশধরদেরকে অবশ্য অবশ্যই আমার কর্তৃত্বাধীনে এনে ফেলব।’
আল্লাহ বললেন, ‘যাও, তাদের মধ্যে যারা তোমাকে মেনে চলবে, জাহান্নামই হবে তোমাদের সকলের প্রতিফল, পূর্ণ প্রতিফল।
তাদের মধ্যে তুমি যাকে পার উস্কে দাও তোমার কথা দিয়ে, তোমার অশ্বারোহী আর পদাতিক বাহিনী দিয়ে তুমি আক্রমণ চালাও, আর তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদিতে ভাগ বসিয়ে দাও (যথেচ্ছভাবে সম্পদ উপার্জন ও ব্যয় করার পরামর্শ দিয়ে আর সন্তান কামনা ও প্রতিপালনে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘনের উপদেশ দিয়ে) আর তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দাও।’ শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তাতো ছলনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
‘আমার বান্দাহদের ব্যাপার হল, তাদের উপর তোমার কোন আধিপত্য চলবে না।’ কর্ম সম্পাদনে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।
তোমাদের (প্রকৃত) প্রতিপালক তো তিনিই, যিনি সমুদ্রে তোমাদের জন্য সুস্থিরভাবে নৌযান পরিচালনা করেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার, তিনি তোমাদের প্রতি বড়ই দয়ালু।
সমুদ্রে যখন বিপদ তোমাদেরকে পেয়ে বসে, তখন তাঁকে ছাড়া অন্য যাদেরকে তোমরা (উপাস্য ভেবে) আহবান কর তারা (তখন তোমাদের মন থেকে) হারিয়ে যায়। অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে স্থলে এনে বাঁচিয়ে দেন, তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ হল বড়ই অকৃতজ্ঞ।
তোমরা কি নির্ভয় হয়ে গেছ যে তিনি তোমাদেরকে স্থলভাগেই যমীনের মধ্যে ধ্বসিয়ে দিবেন না, কিংবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠাবেন না? এমতাবস্থায় তোমাদের রক্ষাকারী কাউকে তোমরা পাবে না।
তোমরা কি ভয়হীন হয়ে গেছ যে, তিনি তোমাদেরকে আরেকবার সমুদ্রে নিয়ে যাবেন না আর তোমাদের উপর প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া পাঠাবেন না আর তোমাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে তোমাদেরকে ডুবিয়ে দেবেন না? তখন তোমরা আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাবে না।
আমি আদাম সন্তানকে সম্মানিত করেছি, তাদের জন্য জলে স্থলে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছি, তাদেরকে পবিত্র রিযক দিয়েছি আর আমি তাদেরকে আমার অধিকাংশ সৃষ্টির উপর মর্যাদায় শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।