সুতরাং যখন আপনি কুরআন পাঠ করবেন [১] তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করুন [২];
[১] কোন কোন মুফাসসির এ আয়াত এবং এর পূর্বের আয়াতসমূহের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে বলেনঃ পূর্ববতী আয়াতসমূহে প্রথমে অঙ্গীকার পূর্ণ করার প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ ও উৎসাহিত করা হয়েছে। শয়তানের প্ররোচনায়ই মানুষ এসব বিধি-বিধানে শৈথিল্য প্রদর্শন করে। তাই এই আয়াতে বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ প্রার্থনা শিক্ষা দেয়া হয়েছে। প্রতিটি সৎকর্মের বেলায় এর প্রয়োজন রয়েছে। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] আলোচ্য আয়াতে বিশেষভাবে কুরআন পাঠের সাথে এর উল্লেখ রয়েছে। ইমাম তাবারী বলেন, সর্বসম্মত মত হচ্ছে যে, এ নির্দেশটি মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। কুরআন তেলাওয়াতের প্রথমে বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়ার কারণ হচ্ছে, যাতে শয়তান কুরআন তিলাওয়াতের সময় কোন প্রকার ঝামেলা করতে না পারে। কোন প্রকার সন্দেহে নিপতিত করতে না পারে এবং চিন্তা ও গবেষণা থেকে দূরে না রাখে। [ইবন কাসীর]
[২] এর অর্থ কেবল এতটুকুই নয় যে, মুখে শুধুমাত্র “আউযুবিল্লাহ" উচ্চারণ করলেই হয়ে যাবে। বরং এ সংগে কুরআন পড়ার সময় যথার্থই শয়তানের বিভ্রান্তিকর প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকার বাসনা পোষণ করতে হবে এবং কার্যত তার প্ররোচনা থেকে নিস্কৃতি লাভের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কুরআন তিলাওয়াত ছাড়া অন্য কোন কালাম অথবা কিতাব পাঠ করার পূর্বে আউযুবিল্লাহ্ পড়া সুন্নত নয়। [ইবনুল কাইয়্যেম; ইগাসাতুল লাহফান] সে ক্ষেত্রে শুধু বিসমিল্লাহ পড়া উচিত। তবে বিভিন্ন কাজ ও অবস্থায় আউযুবিল্লাহর শিক্ষা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। উদাহরণতঃ কারো অধিক ক্রোধের উদ্রেক হলে হাদীসে আছে যে, “আউযুবিল্লাহি মিনাস শায়তানির রাজীম” পাঠ করলে ক্রোধ দমিত হয়ে যায়। [দেখুনঃ বুখারী; ৩২৮২ মুসলিম; ২৬১০]
পায়খানায় প্রবেশ করার পূর্বে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আউয়ুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবায়িস’ পাঠ করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। [দেখুনঃ বুখারী; ১৪২; মুসলিম; ৩৭৫]