ثُمَّ كُلِيْ مِنْ كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِيْ سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًاۗ يَخْرُجُ مِنْ بُطُوْنِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ اَلْوَانُهٗ ۖفِيْهِ شِفَاۤءٌ لِّلنَّاسِۗ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً لِّقَوْمٍ يَّتَفَكَّرُوْنَ ( النحل: ٦٩ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
অতঃপর প্রত্যেক ফল থেকে আহার কর, অতঃপর তোমার প্রতিপালকের (শিখানো) সহজ পদ্ধতি অনুসরণ কর। এর পেট থেকে রং-বেরং এর পানীয় বের হয়। এতে মানুষের জন্য আছে আরোগ্য। চিন্তাশীল মানুষের জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে।
English Sahih:
Then eat from all the fruits and follow the ways of your Lord laid down [for you]." There emerges from their bellies a drink, varying in colors, in which there is healing for people. Indeed in that is a sign for a people who give thought.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এরপর প্রত্যেক ফল হতে আহার কর, অতঃপর তোমার প্রতিপালকের সহজ পথ অনুসরণ কর;[১] ওর উদর হতে নির্গত হয় নানা রঙের পানীয়;[২] যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগমুক্তি।[৩] অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
[১] মৌমাছি প্রথমে পাহাড়ে, গাছে, মানুষের ঘরের উঁচু ছাদে এমনভাবে মৌচাক তৈরী করে যে, মাঝে কোথাও ফাঁক থাকে না। তারপর বাগান, জঙ্গল, পাহাড় ও উপত্যকায় (অনুরূপ ফুলে ভরা শস্যক্ষেতে) ঘুরে বেড়ায় এবং প্রত্যেক ফুল-ফলের মধু ও রস আহরণ করে পেটে জমা করে। আর যে রাস্তায় যায় সেই রাস্তায় ফিরে এসে মৌচাকে গিয়ে বসে। যেখানে তার মুখ দিয়ে মধু উগরে দেয়, যাকে মহান আল্লাহ পানীয় বলে উল্লেখ করেছেন।
[২] লাল, সাদা, নীল, হলুদ বিভিন্ন রঙের। যে ধরনের ফুল-ফল ও ক্ষেত থেকে তারা মধু সংগ্রহ করে, সেই হিসাবে তার রঙ ও স্বাদ বিভিন্ন হয়ে থাকে।
[৩] شفاء (রোগমুক্তি) অনির্দিষ্ট বাহুল্য বর্ণনার জন্য। অর্থাৎ, মধুতে বহু রোগের আরোগ্য রয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, এটি সকল রোগের ঔষধ। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, মধু অবশ্যই আরোগ্য দানকারী আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক এক পানীয়, তবে বিশেষ বিশেষ রোগের জন্য; সকল রোগের জন্য নয়। হাদীসে বর্ণিত, নবী (সাঃ) মিষ্টি জিনিস ও মধু পছন্দ করতেন। (বুখারীঃ পানীয় অধ্যায়) অন্য এক বর্ণনায় আছে তিনি (সাঃ) বলেছেন, "তিনটি জিনিসে আরোগ্য রয়েছে; শিঙ্গা লাগানোতে, মধু পান করাতে ও দাগানোতে। তবে আমি আমার উম্মতকে দাগাতে নিষেধ করছি।" (বুখারীঃ মধু দ্বারা চিকিৎসা পরিচ্ছেদ) হাদীসে একটি ঘটনাও এসেছে। নবী (সাঃ) পাতলা পায়খানার এক রোগীকে মধু পান করার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু তাতে তার রোগ আরো বেড়ে গেল। তিনি দ্বিতীয়বার আবার মধু পান করার পরামর্শ দিলেন। যাতে রোগীর পুরাতন মল বেরিয়ে আসতে লাগল। রোগীর বাড়ির লোকেরা ভাবল যে, রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার এক ভাই আবার নবী (সাঃ)-এর নিকট এল। তখন তিনি বললেন, "আল্লাহ সত্য, তোমার ভায়ের পেট মিথ্যা। যাও, তাকে আবারো মধু পান করাও।" অতঃপর তৃতীয়বার মধু পান করালে সে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করে। (বুখারী, মুসলিম)