তারপর যখন আল্লাহ্ তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূরীভূত করেন তখন তোমাদের একদল তাদের রবের সাথে শির্ক করে [১]---
[১] আল্লামা শানকীতী বলেন, এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা জানাচ্ছেন যে, বনী আদম যখন দুঃখ কষ্ট পায় তখন আল্লাহর জন্য দ্বীনকে খালেস করে আহবান করতে থাকে, তারপর যখন আল্লাহ তাদের কষ্ট দূর করে দেন, বিপদাপদ থেকে মুক্তি দেন, তখন তাদেরই একদল অর্থাৎ কাফের শ্রেণী সবচেয়ে স্বল্পতম সময়ে আগের অবস্থান কুফর ও অবাধ্যতায় ফিরে যায়। কুরআনের অন্যত্রও বলা হয়েছে, “তিনিই তোমাদেরকে জলে-স্থলে ভ্রমণ করান। এমনকি তোমরা যখন নৌযানে আরোহন কর এবং সেগুলো আরোহী নিয়ে অনুকূল বাতাসে বেরিয়ে যায় এবং তারা তাতে আনন্দিত হয়, তারপর যখন দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে এবং চারদিক থেকে উত্তাল তরঙ্গমালা ধেয়ে আসে, আর তারা নিশ্চিত ধারণা করে যে, এবার তারা ঘেরাও হয়ে পড়েছে, তখন তারা আল্লাহকে তাঁর জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে ডেকে বলেঃ "আপনি আমাদেরকে এ থেকে বাঁচালে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখন তারা যমীনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করতে থাকে।" [সূরা ইউনুসঃ ২২]।
অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার সাথে সাথে কোন বুযর্গ বা দেব-দেবীর প্রতি কৃতজ্ঞতারও নযরানা পেশ করতে থাকে এবং নিজেদের প্রত্যেকটি কথা থেকে একথা প্রকাশ করতে থাকে যে, তাদের মতে আল্লাহর এ মেহেরবানীর মধ্যে উক্ত বুযর্গ বা দেব-দেবীর মেহেরবানীও অন্তর্ভুক্ত ছিল বরং তারাই মেহেরবানী করে আল্লাহকে মেহেরবানী করতে উদ্বুদ্ধ না করলে আল্লাহ কখনোই মেহেরবানী করতেন না। বর্তমানেও অধিকাংশ পথভ্রষ্ট মানুষ এ ধরণের শির্ক করে থাকে। তারা তাদের উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য পীর-ফকীর, দরগাহর মেহেরবানী বা সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত আছে বলে বিশ্বাস করে থাকে।