তারা তাদের দিকে ফিরে বলল, ‘তোমাদের কী হারিয়েছে?’
তারা বলল- ‘আমরা রাজার পান পাত্র হারিয়েছি, (তাদের প্রধান ব্যক্তি বলল) যে তা এনে দিতে পারবে তার জন্য আছে এক উট-বোঝাই মাল। আর আমিই এ ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
ইউসুফের ভাইয়েরা বলল, ‘আল্লাহর শপথ! তোমরা তো জান আমরা এ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে আসিনি, আর আমরা চোরও নই।’
রাজকর্মচারীরা বলল, ‘তোমরা মিথ্যেবাদী হলে যে চুরি করেছে তার শাস্তি কী হবে?’
তারা বলল, ‘তার শাস্তি হল যার মালের ভিতর ওটা পাওয়া যাবে তাকেই ধরে রাখা হবে। সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে আমরা এভাবেই শাস্ত দিয়ে থাকি।’
অতঃপর ইউসুফ তার নিজ ভাইয়ের মালপত্র তল্লাশির আগে অন্যদের মাল তল্লাশি শুরু করল। অতঃপর সেটি তার নিজ ভাইয়ের মালপত্র থেকে বের করল। এভাবে আমি ইউসুফের জন্য পরিকল্পনা করেছিলাম। রাজার আইন অনুযায়ী সে তার সহোদর ভাইকে আটক করতে পারত না-আল্লাহর ইচ্ছে ব্যতীত। আমি যার জন্য ইচ্ছে করি মর্যাদা উচ্চ করি, প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছেন একজন সর্বজ্ঞ।
ইউসুফের ভাইয়েরা বলল, ‘সে যদি চুরি করে থাকে (তবে তা অসম্ভব নয়, কেননা) এর পূর্বে তার সহোদর ভাইও চুরি করেছিল। তখন ইউসুফ এ ব্যাপারটি তার মনেই গোপন রাখল, তা তাদের কাছে প্রকাশ করল না। সে (মনে মনে) বলল- তোমাদের অবস্থান তো আরো নিকৃষ্টতম, তোমরা যা বলছ সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত।
তারা বলল, ‘হে ‘আযীয! এর পিতা আছেন যিনি খুবই বৃদ্ধ, কাজেই তার স্থলে আমাদের একজনকে রাখুন, আমরা তো আপনাকে বড়ই সদাচারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত দেখছি।’
সে বলল, ‘যার কাছে আমাদের মাল পেয়েছি তাকে ছাড়া অন্যকে ধরার কাজ থেকে আল্লাহর পানাহ চাচ্ছি, তা করলে আমরা যালিম হিসেবে পরিগণিত হব।’
যখন তারা ইউসুফের নিকট থেকে নিরাশ হয়ে গেল তখন তারা নির্জনে গিয়ে পরামর্শ করল। তাদের মধ্যে বয়সে সবার বড় ভাইটি বলল, ‘তোমরা কি জান না যে, তোমাদের পিতা তোমাদের থেকে আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ করেছেন, আর এর পূর্বেও তোমরা ইউসুফের ব্যাপারে (তোমাদের কর্তব্য পালনে) ব্যর্থ হয়েছ, কাজেই আমি কিছুতেই এখান থেকে নড়বো না যতক্ষণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দিবেন কিংবা আল্লাহ আমার ব্যাপারে কোন নির্দেশ দিবেন, কেননা তিনি হলেন সর্বোত্তম ফায়সালাকারী।