হে আমার জেলের সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের দু’জনের একজন তার প্রভুকে মদ পান করাবে আর অন্যজনকে শূলে দেয়া হবে, আর পাখী তার মস্তক ঠুকরে খাবে। তোমরা দু’জন যে সম্পর্কে জানতে চেয়েছ তার ফায়সালা হয়ে গেছে।’
তাদের দু’জনের মধ্যে যে জন মুক্তি পাবে ব’লে সে (ইউসুফ) মনে করল তাকে বলল, ‘তোমার প্রভুর কাছে আমার সম্পর্কে বলিও।’ কিন্তু শয়তান তাকে তার প্রভুর কাছে ইউসুফের কথা উল্লেখ করতে ভুলিয়ে দিল। ফলে ইউসুফ বেশ কয়েক বছর কারাগারে আটক থেকে গেল।
রাজা বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভী, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভী তাদেরকে খাচ্ছে। (আর দেখলাম) সাতটি সবুজ সতেজ শীষ আর অন্য সাতটি শুকনো। ওহে সভাষদগণ! আমার কাছে তোমরা আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কর যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পার।’
তারা বলল, ‘এতো অস্পষ্ট (অর্থহীন) স্বপ্নের কথা, আর আমরা এ ধরনের স্বপ্ন ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই।’
দু’জনের মধ্যে যে জন জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিল আর দীর্ঘকাল পর যার স্মরণ হল সে বলল, ‘আমি তোমাদেরকে তার ব্যাখ্যা বলে দেব, তবে তোমরা আমাকে (জেলখানায় ইউসুফের কাছে) পাঠাও।
সে বলল, ‘হে সত্যবাদী ইউসুফ! সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভী, যাদেরকে খাচ্ছে জীর্ণশীর্ণ সাতটি গাভী আর সাতটি সবুজ সতেজ শীষ আর অন্যগুলো শুকনো। (আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা জানিয়ে দাও) যাতে আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে পারি আর তারা জেনে নিতে পারে।’
সে (ইউসুফ) বলল, ‘সাত বছর তোমরা এক নাগাড়ে চাষ করবে, অতঃপর যখন ফসল কাটবে তখন তোমরা যে সামান্য পরিমাণ খাবে তা বাদে শিষ সমেত সংরক্ষণ করবে।
এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর। এ সময়ের জন্য পূর্বে যা তোমরা সঞ্চয় করেছিলে তা লোকে খাবে, কেবল সেই অল্পটুকু বাদে যা তোমরা সঞ্চয় করবে।
এর পর আসবে একটা বছর যখন মানুষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে আর মানুষ প্রচুর ভোগবিলাস করবে।’
রাজা বলল, ‘তোমরা তাকে (ইউসুফকে) আমার কাছে নিয়ে এসো।’ দূত যখন তার কাছে আসলো তখন ইউসুফ বলল, ‘তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর, সেই মহিলাদের ব্যাপারটি কী যারা তাদের হাত কেটে ফেলেছিল? আমার প্রতিপালক অবশ্যই তাদের কৌশল সম্পর্কে অবগত।’