حَتّٰىٓ اِذَا جَاۤءَ اَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّوْرُۙ قُلْنَا احْمِلْ فِيْهَا مِنْ كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ وَاَهْلَكَ اِلَّا مَنْ سَبَقَ عَلَيْهِ الْقَوْلُ وَمَنْ اٰمَنَ ۗوَمَآ اٰمَنَ مَعَهٗٓ اِلَّا قَلِيْلٌ ( هود: ٤٠ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
শেষে যখন আমার নির্দেশ এসে গেল, আর তন্দুর (পানিতে) উথলে উঠল, আমি বললাম, ‘প্রত্যেক শ্রেণীর যুগলের দু’টি তাতে তুলে নাও আর তোমার পরিবার পরিজনকে, তাদের ছাড়া যাদের ব্যাপারে আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকেও (তুলে নাও)। তার সঙ্গে ঈমান এনেছিল খুব অল্প কয়েকজনই।
English Sahih:
[So it was], until when Our command came and the oven overflowed, We said, "Load upon it [i.e., the ship] of each [creature] two mates and your family, except those about whom the word [i.e., decree] has preceded, and [include] whoever has believed." But none had believed with him, except a few.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
অবশেষে যখন আমার নির্দেশ এসে পৌঁছল এবং ভূ-পৃষ্ঠ (চুলা) হতে পানি উথলিয়ে উঠতে লাগল[১] তখন আমি বললাম, ‘প্রত্যেক যুগল (প্রাণীর) জোড়া জোড়া তাতে (নৌকাতে) উঠিয়ে নাও[২] এবং নিজ পরিবারবর্গকেও; তবে তাকে নয় যার সম্বন্ধে পূর্ব-সিদ্ধান্ত হয়ে আছে।[৩] আর যে বিশ্বাস করেছে তাকেও (উঠিয়ে নাও)।’[৪] বস্তুতঃ অল্প কয়েকজন ছাড়া কেউই তার প্রতি বিশ্বাস করেনি। [৫]
[১] تنور এর অর্থ অনেকে রুটি পাকানোর তন্দুর চুলো, অনেকে 'আইনুল অরদাহ' নামক বিশেষ স্থান এবং কেউ কেউ ভূ-পৃষ্ঠ করেছেন। হাফেয ইবনে কাসীর (রঃ) এই শেষের অর্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। অর্থাৎ, ভূপৃষ্ঠের সকল স্থান হতেই ঝরনার মত পানি উঠেছিল, তুফান আনার অবশিষ্ট কমতি উপর থেকে আকাশের মুষলধারা বৃষ্টি পূরণ করেছিল।
[২]( অর্থাৎ, নর ও মাদী। এরূপ সকল সৃষ্ট জীবের জোড়া জোড়া কিশতীতে রেখে নেওয়া হয়েছিল। আর অনেকে বলেন, যে গাছপালাও রাখা হয়েছিল। আর আল্লাহই ভালো জানেন। (যুগল জীবের এক এক জোড়া বলতে যেসব প্রাণী স্ত্রী-পুরুষের মিলনে বংশ বিস্তার করে এবং পানির মধ্যে বেঁচে থাকতে পারে না কেবল তাদেরকেই জাহাজে উঠানো হয়েছিল। -সম্পাদক)
[৩] অর্থাৎ, যাদের ডুবে মরা আল্লাহর তকদীরে নির্ধারিত আছে। উদ্দেশ্য সমস্ত কাফের, অথবা এই استثناء (বিয়োজন) 'পরিবারবর্গ' শব্দ থেকে করা হয়েছে। অর্থাৎ, নিজ পরিবারবর্গকে কিশতীতে আরোহণ করিয়ে নাও, সে ব্যতীত যার সম্বন্ধে পূর্ব-সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। অর্থাৎ, একঃ পুত্র কিন্আন বা য়্যাম এবং দুইঃ নূহ (আঃ)-এর স্ত্রী ওয়াইলা, এরা উভয়ে কাফের ছিল, তাদেরকে কিশ্তীতে আরোহণকারীদের জামাআত থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
[৪] অর্থাৎ সমস্ত ঈমানদারগণকে কিশতীতে তুলে নাও।
[৫] কেউ কেউ (কিশতীতে আরোহীদের) সর্বমোট (নারী ও পুরুষ মিলে) সংখ্যা ৮০ জন এবং কেউ কেউ তার থেকেও কম বলেছেন। যাদের মধ্যে নূহ (আঃ)-এর তিন পুত্র সাম, হাম, ইয়াফেস ও তাঁদের স্ত্রীগণও ছিলেন, কারণ তাঁরা মুসলমান ছিলেন। এদের মধ্যে য়্যামের স্ত্রীও ছিলেন। য়্যাম ছিল কাফের; কিন্তু তার স্ত্রী মুসলমান হওয়ার কারণে তাঁকে কিশতীতে উঠানো হয়েছিল। (ইবনে কাসীর)